বঙ্গবন্ধুর হাত দিয়েই দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হয়


এপ্রিল ২০ ২০২২

বর্তমান সরকার দেশের যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছেন। সকারের নানা ধরনের উদ্যেগের ফলে এবং সচেতনা বৃদ্ধির কারনে এখন আর ঘূর্ণিঝড়, জলচ্ছ্বাসেউপকুলীয় মানুষের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয় না বরং কমে এসেছে। সাতক্ষীরায় জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থপনা বিষয়ক দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত কর্মশালায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ও যুগ্ম সচিব নিশ্চিন্ত কুমার পোদ্দার এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ১৯৭০ সালে ভয়াবহ বন্যায় দেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বহু মানুষের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে। তখন ৭০ এর নির্বাচন চলাকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচনী প্রচরণা রেখে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। বুধবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সন্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থপনা বিষয়ক দিনব্যাপী মৌলিক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।

এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। এতে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারী সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, জেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, তালা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মাশরুবা ফেরদৌস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কাজী আরিফুর রহমান, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন, সাতক্ষীরা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আব্দুল বাছেদ, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা, কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম, কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ও দৈনিক সাতঘরিয়া পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মোজাফ্ফর রহমান প্রমুখ। যুগ্ম সচিব নিচিন্ত কুমার পোদ্দার বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে সিপিপি’র যাত্রা শুরু করেছিলেন। যারা আগাম সতর্কসংকেত প্রচার এবং সন্ধান ও উদ্ধার কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষের জানমাল রক্ষায় ব্যাপক ভূমিকা রেখে আসছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক-নির্দেশনায় সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক সংখ্যা ৭৬ হাজার ২০ জনে উন্নীত হয়েছে। এই স্বেচ্ছাসেবকদের অর্ধেক নারী। তিনি আরো করেন, পুরো দেশ জুড়ে আধুনিক আবহাওয়ার রাডার এবং পূর্বাভাস ব্যবস্থা রয়েছে। উপকূলে ৫ হাজারের বেশি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। জরুরি পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দুর্যোগে প্রাণহানির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) নিচিন্ত কুমার পোদ্দার বলেন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ১০ লক্ষাধিক মানুষ প্রাণ হারান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে সাম্প্রতিককালে একই মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি একক সংখ্যায় নেমে এসেছে। তিনি আরও বলেন ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ত্রাণ নির্ভর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পরিবর্তে দুর্যোগ ঝুঁকি হৃাসমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আগাম সতর্কবার্তা প্রচার ব্যবস্থা শুরু করেন। উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবন ও সম্পদ বাঁচাতে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রচারে সিপিপি গুরুত্বপূর্র্ণ ভূমিকা পালন করছে। কর্মশালায় জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, বিভিন্ন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাবৃন্দ, র‌্যাব, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস’র কর্মকর্তা, আনসার ভিডিপি, রোভার স্কাউসের প্রতিনিধিসহ জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।