আশাশুনির আ’লীগ নেতা শরবত মোল্লা হত্যার প্রধান আসামী চেয়ারম্যান ডালিম গ্রেপ্তার


সেপ্টেম্বর ২৯ ২০২০

সাতক্ষীরা জার্নাল: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার গদাইপুর গ্রামে ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা শরবত মোল্লা হত্যা মামলার প্রধান আসামী খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিমকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে ঢাকার খিলখেত থানাধীন একটি নিজস্ব ফ্লাট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৮ এপ্রিল গদাইপুর বিলে মঞ্জুরুল মোল্লার চিংড়ি ঘেরের দু’ কর্মচারিকে বেঁধে রেখে মাছ লুটের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে ক্ষুব্ধ হন গদাইপুর গ্রামের মোজাহার সরদারের ছেলে শাহানেওয়াজ ডালিম ওরফে ডালিম। এরই জের ধরে ডালিমের দু’ ভাই ও তাদের লোকজন ৯ এপ্রিল সবেবরাতের রাতে গদাইপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরবৎ মোল্লা ও মঞ্জুরুল মোল্লার চিংড়ি ঘেরে লুটপাট চালায়।

১০ এপ্রিল সকালে ওই মাছ চেয়ারম্যান, তার ভাই গদাইপুর মাছের সেটে বিক্রি করতে গেলে শরবত মোল্লার সঙ্গে বচসা বাঁধে। এ নিয়ে হাতাহাতিও হয়। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান তার ভাই টগরকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে এমন প্রচার দিয়ে তার পক্ষের লোকজনকে সংগঠিত করে শরবত মোল্লাকে তার বাড়ির পাশের পুরাতন কবরস্থানের পাশে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে ডালিম ও তার লোকজন। শরবতকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে স্ত্রী শরিফা খাতুন ও প্রতিবেশি আরিফা খাতুন, তুয়ারডাঙার সুবিমল বিশ্বাসসহ কয়েকজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। ভাঙচুর করা হয় তাদের বাড়িসহ পাঁচটি বাড়ি। শুক্রবার সকালে তার দু’ ছেলে সবুজ ও শিমুল, তাকে ও স্বামীকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও পরে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করে।

১১ এপ্রিল গভীর রাত একটার দিকে শরবৎ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় গ্রামের ক্ষুব্ধ মানুষজন ডালিম ও তার কয় সহযোগীদের বাড়ি ভাঙচুর করে। নিহত শরবতের ছেলে সবজু বাবাকে হত্যার অভিযোগে ১১ এপ্রিল শনিবার রাতেই ডালিমকে প্রধান আসামী করে ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করে। রাতেই পুলিশ চেয়ারম্যানের ভাই জুলফিকার জুলি, আব্দুস সালাম বাচ্চুসহ ১০জনকে গ্রেপ্তার করে। জুলি ও বাচ্চুকে রিমাণ্ডে নেয় পুলিশ। ডালিম চেয়ারম্যানের ভাই আহসান হাবিব টগরের উপর হামলা ও চেয়ারম্যানের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় চেয়ারম্যানের ভাই ওবায়দুল্লাহ ডাবলু বাদি হয়ে থানায় পৃথক দু’টি মামলা করেন। মালা দু’টিতে শরবতের ছেলে সবুজ, শিমুল ও কয়েকজন সাক্ষীকে অসামী করা হয়। আসামী করা হয়েছে ডালিমের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে দায়েরকৃত কয়েকটি মামলার বাদিদেরকেও। এ ছাড়াও এক মুক্তিযোদ্ধা নুরুল শেখের স্ত্রী জামেলা বাদি হয়ে তার বাড়ি ঘর ভাঙচুরের ঘটনায় আরো একটি মামলা দায়ের করেন। সাড়ে পাঁচ মাস পর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহানেওয়াজ ডালিমকে ঢাকার খিলখেত থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

সাতক্ষীরা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইয়াছিন আলম চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা শরবৎ হত্যা মামলার আসামী শাহানেওয়াজ ডালিমকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তাকে ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় আনা হচ্ছে।