শীত মানেই উৎসবমুখর চারপাশ


ডিসেম্বর ২১ ২০২০

শীত আসতেই টাটকা চালের হাতে বানানো গরম-গরম পিঠাপুলি, ভাপা পিঠা, পাটিসাপটা, চিতই, দুধ পুলি ম-ম গন্ধ চারিদিক ভরে ওঠে।শীতের সঙ্গে উৎসবের একটা গভীর যোগসূত্র রয়েছে। গ্রাম বাংলায়, এমনকি নগরেও আমেজ নিয়ে আসে শীত।

কুয়াশায় ঢাকা ভোরে ঘুমভাঙা মানুষ বাড়ির উঠানে, বারান্দায়, , রাস্তার ধারে, চা দোকানের মাচায়, পুকুরের ধারে আড্ডায় মেতে ওঠে। মিষ্টি রোদের ওম নিতে নিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেতে থাকে নানা গল্পগুজবে। সবার মনেই এক ধরনের ফুর্তি ফুর্তি ভাব। যার যার কাছে এটিও একধরনের উৎসব।

গ্রামবাংলার লোকায়ত সংস্কৃতির যত আয়োজন আছে, সবই আয়োজিত হয় শীতের রাতে। যেমন—কবিগান, জারিপালা, মুর্শিদিগান, মাঘীপূর্ণিমা, মানিক পীরের গান, পতুলনাচ, মাদার বাঁশের জারি, মাইজভাণ্ডারি গান ইত্যাদি। শীতের রাতে নানা ধরনের নাট্যগীতের আয়োজনে মুখর হয় গ্রামবাংলা।

শীতকালে খাবার তালিকায় পরিবর্তন ঘটে। শীতকালে গ্রামের ঘরে ঘরে নতুন ধান ওঠে। এতে উৎসবে পায় আরেকটা মাত্রা। ঘরে ঘরে তখন পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। ঢাকায় যাদের বাস তারা নানা রকম পিঠায় মেলায় ঘুরে ঘুরে পিঠা খায়। সকালের কুয়াশা কিংবা সন্ধ্যার হিমেল বাতাসে ভাপা পিঠার গরম আর সুগন্ধি ধোঁয়ায় মন আনচান করে ওঠে। সরষে বা ধনেপাতা বাটা অথবা শুঁটকির ভর্তা মাখিয়ে চিতই পিঠা মুখে দিলে ঝালে কান গরম হয়ে যায়।

আর ভ্রমণের জন্য তো শীতকালের বিকল্প নেই। শীত আসলেই সবাই যান্ত্রিক শহর ছেড়ে ভ্রমণে বেরিয়ে পরে। কক্সবাজার, টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, নিঝুমদ্বীপ, সুন্দরবন, পটুয়াখালী, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরে আসে।

পৌষসংক্রান্তি বা মকরসংক্রান্তি বাঙালি সংস্কৃতিতে একটি বিশেষ উৎসবের দিন। এটিও শীত উৎসবের অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। পৌষ মানেই পিঠা খাওয়া, ঘুড়ি উড়ানো উৎসবে মেতে ওঠে। সারা দিন ঘুড়ি উড়ানোর পরে সন্ধ্যায় পটকা ফুটিয়ে ফানুস উড়িয়ে উৎসবের সমাপ্তি করা হয়।